উজ্জ্বল ঘোষ

ভাস্কর

বাঁচার পাথর ঠোকে আসা-যাওয়া
তুলে আনে নতুন আয়না

অপলক চেয়ে থাকি নটনটী হাত-পাগুলোয়
প্রতিবিম্বে দগ্ধ নদে হৃৎপক্ষ ফোটে

মেঘ আসে ধসে-পড়া হিমালয় থেকে
ভাঙাচোরা বৃষ্টি দিয়ে প্লাবন শানায়

পাথর ও বস্তা বেঁধে যে গান রচিত হবে
তাকে নিয়ে, হে প্লাবন, কোথায় হারাবে?

বাবা যখন সেলাই করে

প্রবীন সেলাই করে ছেঁড়া জামাপ্যান্ট।
তিনটে চড়ুই পাখি পাশে এসে বসে।
ওরা জানে মনোযোগ অশ্বত্থের স্নেহছায়া; তাই
নিশ্চিন্তে কিছুটা খেলে যায় জানালায়।

শহরের রাস্তা লেখে— বাই টু গেট টু;
শহরযন্ত্রণা চায় প্যারাসিটামল।

প্রবীন সেলাই করে সবুজ বোতাম।
হলুদ কাঁঠাল পাতাগুলো খুশি হয়।
হলুদ হওয়ার দীর্ঘ পথ তারা জানে;
মাটির বাদামি গান রেখে যায় সবুজ বোতামে।

মাটি

পথে পথে ঘুরি। কাজ করি। আলা হলে
প্রাকৃত ইউটিউব শুনি, যেন রাস্তাময়
কুমার গান্ধর্ব মাটি কবীরের গান গায়, আর
আকাশের দিকে চেয়ে দুহাত বাড়ায়।
বৃষ্টি নেমে আসে, নির্ভয় নির্গুণ বৃষ্টি।

গায়ে মাখি গঙ্গামাটি, কাদার তিলক।
এই মাটি শুধু অবশেষ নয়; আমার অশেষ।

মাটির বিহার

অনেক বলেছি আমি। প্রভু, আর নয়।
ঠোঁটের চাবুক তুমি নষ্ট করে দাও।
স্তব্ধ কর স্বর। থামি। থামা দরকার।

এবার শুনব আমি রোদের হৃদয়;
রোদের ভিতর কাঁদে সবুজ ভারত;
শুনি তার রক্তিম পা, গন্তব্যের শাঁখ।

এঁটেল-দোআঁশে শুনি মাটির বিহার;
উলঙ্গ চরণ শুনি; গহন সহন শুনি;
শুনি দেশ, আরাধ্য ভারত।

মালা

এসো এসো বন্ধুজন আমার মালায়।
গ্রন্থন বিদ্যায় দীন, তবু মালা গাঁথি
ভ্রমণের আলো অন্ধকারে। এসো এসো দলবল,
চন্দন-চিত্রিত চোখ; এসো একা-হওয়া
দৃশ্যের দোতারা, স্মৃতি সুর লিপি, শ্রুতি-অগোচর;
মালা গাঁথি, মালা হই আদি-অন্তহীনের গলায়।

4 thoughts on “উজ্জ্বল ঘোষ

  1. Hats off ভাই… কথা দিয়েছিলি গতুদা, রংকিনি ঝিল,বাড়ি ফেরার গুড়াপ স্টেশন ফিরিয়ে দিবি… আমি ফিরে পেলাম ❤️❤️❤️ আমার মা পড়লে বোধয় ইলামপুরের বাড়ির পাশে পুকুর পারের একলা ঘুঘুটার ডাকও শুনতে পাবে ❤️❤️❤️

    Like

Leave a comment

Design a site like this with WordPress.com
Get started