বিপ্লব রাজোয়ার

আবহমান

মাটির নিচে শুয়ে থাকা বীজগুলো,
বর্ষার জল পেয়ে কেমন জেগে ওঠে,
মাথা তোলে আলোর দিকে।

হালকা হলুদ থেকে একটু একটু করে
আলোর ছোঁয়ায় সবুজ হয়ে ওঠে।

ডাল-পালা বেড়ে ওঠে,
ফুল হয়,
ফল হয়,
ফল পেকে ওঠে,
টুপ করে ঝরে পড়ে মাটিতে।

মাটির বুকে মিশে যায়।

আবারও অপেক্ষা করে বর্ষার জন্য।

স্নান

তোমার গৌর বর্ণ শরীরে আমি একটু একটু করে তলিয়ে যাচ্ছি।

তোমার অজানুলম্বিত হাত আমাকে যে কোনো মূহুর্তে ছু্ঁতে পারে।

নাভি থেকে বুক পর্যন্ত নরম দূর্বা ঘাস
ভাগীরথীর জল লেগে ঝিকমিক করছে।

তোমার সমস্ত শরীর ভাগীরথীর জল ছু্ঁয়ে গেলে,
আমি সে জলে নামি তোমাকে পাই তোমাকে।

রুমির হাত

যতবার রুমি পড়ি,
তোমার মুখ ভেসে ওঠে নরম আলোর মতো।

যে হাত ধরিয়ে ছিলো রুমির হাত।

ফজরের নামাজের আলোয়,
ঝরা শিউলির গন্ধ মেখে কুয়াশার সাথে মিসে গেছে সে হাত।

অনেক কুয়াশা জল ঘেঁটেও তোমাকে পাইনি।

তুমি বলে ছিলে ভালোবাসলে অনেক দূরে চলে যেতে হয়।

গতিপথ

অন্ধের কাছে তোমার আলোর বর্ণনা মিথ্যে।

তার কাছে কোন অথবা নেই তাই তার প্রিয় রঙ কালো।

গাছ বলতে সে কী বাবা বোঝে,
নদী বলতে মা,
আকাশ বলতে সে কী হৃদয়ে হাত দেয়?

অনুভূতির রঙ দিয়ে চলন্ত ব্লাকবোর্ডে
সে যে ছবি আঁকে, সে ছবি তাঁর নিজের।

ধৃতরাষ্ট্রের একটা সঞ্জয় ছিলো
সকলের কী সঞ্জয় থাকে?

কেন?

কাঁধে রাখার মতো কোন হাত নেই বাবা।

মা আমাকে গাছ, পাখি চিনতে শিখিয়েছে
মানুষ চিনতে শেখায়নি।

তুমি নির্জনতা, নীল আকাশ আর সবুজ বনানী কেন ভালোবাসো।
আমি এখন একটু একটু বুঝতে পারি বাবা।

তোমার মাটির দেওয়ালে,
কাঠ কয়লা দিয়ে তুমি কেন গাছ আঁকো বাবা
কেন মানুষ আঁকো না?

দিদিকে তুমি হাঁস আর শামুকের সাথে বন্ধু করে দিয়েছিলে,
কেনো মানুষের সাথে দাওনি।

আমার যে বড়ো ভুল হয় বাবা।
গাছকে যত সহজে চিনতে পারি,
মানুষকে তত সহজে পারি না।

কেন তুমি গাছ চিনতে শেখালে মা?
কেন মানুষ চিনতে শেখালে না?

নতুন মুখ

বিপ্লব রাজোয়ার
জন্ম ২১ নভেম্বর ১৯৯৭
বাবা শিবু রাজোয়ার
মা সুভদ্র রাজোয়ার
শিক্ষা স্নাতক পাঠরত
প্রিয় বই আরণ্যক, পথের পাঁচালি
প্রিয় লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শখ ছবিতোলা, ঘুরেবেড়ানো, বাগান করা, বই পড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখা
ঠিকানা দাঁইহাট, খেয়াঘাট, পূর্ব বর্ধমান
ফোন +৯১ ৯০৬৪৭ ৩৫৫৪৩

6 thoughts on “বিপ্লব রাজোয়ার

  1. মুগ্ধ হয়ে গেলাম, 😍 প্রতিভা থাকলে হয় না সেটাকে প্রকাশ করতে হয়🥀
    এগিয়ে যা সামনে আর অনেক বড় হ 💕🤗

    Like

Leave a comment

Design a site like this with WordPress.com
Get started